সময়খেকো ফড়িং ঘড়ি

. Friday, October 24, 2008
  • Agregar a Technorati
  • Agregar a Del.icio.us
  • Agregar a DiggIt!
  • Agregar a Yahoo!
  • Agregar a Google
  • Agregar a Meneame
  • Agregar a Furl
  • Agregar a Reddit
  • Agregar a Magnolia
  • Agregar a Blinklist
  • Agregar a Blogmarks

ঘড়ি বলতে যা বোঝায় তা হলো নানা আকৃতির কাঁটাবিশিষ্টএকটি যান্ত্রিক ব্যবস্থা, যা টিকটিক করে সময়ের জানান দেবে; কিন্তু কেউ কি কাঁটা ও সংখ্যা ছাড়া ঘড়ির নাম শুনেছেন কোনোদিন?

ড. টেইলর হলেন একজন হরোলজিষ্ট, যিনি সময় পরিমাপ বিষয়ে কাজ করেন। তিনি এমন একটি ঘড়ি তৈরি করেছেন, যার কোনো কাঁটা বা হাতা নেই, নেই সংখ্যাও। শুধু সময় প্রদর্শনের জন্য এর পৃষ্ঠে ৬০টি চিরকাঁটা এবং একটি ঘাসফড়িং ব্যবহৃত হয়েছে। এ ঘাসফড়িংটির নড়াচড়ার ফলে নীল বর্ণের আলোক ঝলকের সৃষ্টি হয়, যা পুরো পৃষ্ঠ প্রদক্ষিণ শেষে একটা নির্দিষ্ট সময় পর থামে। কিন্তু ঘড়িটিকে পাঁচ মিনিটে একবার সঠিক বলা যায়। কারণ প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর অন্তর আলোটি সময় প্রদর্শনের জন্য থামে। উল্লিখিত ঘাসফড়িংটিকে সময় পরিমাপক বলা যায়, যা কি-না প্রায় চার ফুট ব্যাসবিশিষ্ট পৃষ্ঠে অগ্রসর হতে থাকে এবং এর প্রতিটি পদক্ষেপকে এক সেকেন্ড বলা হয়। এর পৃষ্ঠে ২৪ কেরেট সোনার প্রলেপ দিতে ৮ জন প্রকৌশলী এবং দক্ষ কারিগরের ৫ বছর সময় লেগেছে। ঘড়িটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ পাউন্ড। এটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বৈদ্যুতিক মোটর, যা ২৫ বছর পর্যন্ত সচল থাকবে। ঘড়িটিতে প্রদর্শিত ঘাসফড়িংটি হিংস্রতার প্রতীক, যে সময়ের ওপর জিহ্বা বের করে হাঁ করে বসে আছে এবং সময় বা সেকেন্ডগুলোকে চেটে চেটে ৫৯তম সেকেন্ডে পুরোপুরি গলাধঃকরণ করছে। তাই একে বলা হয় সময়খেকো বা টাইম ইটার। এ জন্যই বোধ হয় ঘড়িটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে আজব ঘড়ি বলা হয়। ঘড়িটির উদ্ভাবক জন টেইলর বলেন, ‘ঘাসফড়িংটি কোনো হাস্যকর চরিত্র নয়’। তিনি এটিই বোঝাতে চেয়েছেন যে, নিষ্ঠুর সময় একবার চলে গেলে কেউ তা কখনো ফিরে পাবে না।

১৯৭২ সালে তিনি ইংরেজ ঘড়ি নির্মাতা জন হ্যারিসনের স্মরণে ঘড়িটির নকশা করেন। জন হ্যারিসন ১৮ শতকে দ্রাঘিমা সমস্যার সমাধান করেন এবং ঘাসফড়িংবিশিষ্ট একটি ঢাল ও ছোট যন্ত্রাংশ তৈরি করেন, যা দোলনের সময় দোলকটিকে মুক্ত রাখে। এক সাক্ষাৎকারে ড. টেইলর বলেন, গতানুগতিক ঘড়ির কাঁটাগুলো দেখতে দেখতে একঘেয়ে মনে হয়। তাই সময় গণনার জন্য নতুন কিছু তৈরির আশা নিয়ে যন্ত্রটিকে আরো সুন্দর ও উন্নত করেছেন। প্রতীকী অর্থে, সময়বিনাশি ও ক্ষয়িষ্ণু এবং কোনো কিছু সময়কে খেয়ে ফেলছে, ঘাসফড়িং দিয়ে তিনি তাই দেখিয়েছেন।

এ ঘড়িটি কর্পাস ক্রিষ্টি কলেজের লাইব্রেরির বাইরের দেয়ালে স্থাপন করা হবে সাধারণ মানুষের অবলোকনের জন্য। ১৯৫০ সালে জন টেইলর এ কলেজের ছাত্র ছিলেন। কলেজটিকে তিনি উপহার হিসেবে ঘড়িটি প্রদান করেন। ঘড়ির উদ্বোধনকালে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ গ্রন্থের লেখক স্টিফেন হকিংও এমন একটি আজব ঘড়ির প্রস্তাবক, যার ব্যাস এক মিটার। British Horological College (BHC) -এর পরিচালক এলান মিল্টন বলেন, ‘পরিকল্পনাটি আসলে চমৎকার। তবে এটা কি বিগ ব্যাঙ-এর মতো বিখ্যাত হবে? তা সময়ই বলে দেবে। যদিও আমি এর সত্যতার ওপর সংশয়াপন্ন।’

0 comments: