এবার চাঁদেও পানি!

. Tuesday, October 21, 2008
  • Agregar a Technorati
  • Agregar a Del.icio.us
  • Agregar a DiggIt!
  • Agregar a Yahoo!
  • Agregar a Google
  • Agregar a Meneame
  • Agregar a Furl
  • Agregar a Reddit
  • Agregar a Magnolia
  • Agregar a Blinklist
  • Agregar a Blogmarks

মানুষ কেন ভিনগ্রহের পানে ছুটছে, তার সবচেয়ে সহজ উত্তর হলো, প্রাণের অস্তিত্ব। অন্য প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজা মানে নিজেদের দ্বিতীয় আবাস তৈরি করা। প্রাণের সরাসরি দেখা না পেলেও তাদের চিহ্নটা পেলেও চলে। তাহলে হয়তো একে মানুষের উপযোগী করে গড়ে তোলা যাবে। তবে মানুষ থাকতে হলে সবার আগে দরকার অক্সিজেন, তথা পানি। তাই ভিনগ্রহে বিজ্ঞানীদের চোখ চকচক করে ওঠে পানির সাড়া পেলে; সেটা মঙ্গলেই হোক আর দুরের কোনো তারায়ই হোক। পানির দেখা মিলবে−এমন আশায় মঙ্গলের পানে হাত বাড়িয়েছে মানুষ। মঙ্গলে যাওয়ার জন্য অনেক পরিকল্পনা আছে মানুষের। মঙ্গলের মহড়াটা তারা সারতে চায় আবারও চাঁদে গিয়ে। তবে চাঁদে যে পানি নেই, সে কথা অনেক আগেই জেনে গেছি আমরা। তাই হয়তো চাঁদ নিয়ে সরাসরি মাথাব্যথা নেই।

মাথাব্যথাটা নতুন। খুব সম্প্রতি চাঁদেও পানির অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। চাঁদের পানে তাকিয়ে সেই পানির দেখা মেলেনি; বরং চাঁদের পানির দেখা মিলেছে পৃথিবীতে, আমাদের সিন্দুকে। প্রায় চার দশক আগে চাঁদ থেকে যে মাটির টুকরো নিয়ে এসেছিলাম আমরা, সেখানেই পানির অস্তিত্বের সন্ধান মিলেছে। চাঁদের মাটি নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা সেখানে পানি থাকার আলামত পেয়েছেন। তবে এই মাটিতে পানি লেগেছিল অন্তত ৩০০ কোটি বছর আগে। সেই সঙ্গে চাঁদের জন্ন নিয়েও নতুন করে কথা উঠেছে। আগেকার ধারণা ছিল, পৃথিবীর সঙ্গে অন্তত মঙ্গলের আকারের কোনো গ্রহের সংঘর্ষের ফলে চাঁদের জন্ন হয়। আর তখন সেখানে যে পরিমাণ তাপের সৃষ্টি হয়েছিল, পানি উধাও করে দিতে সেটাই যথেষ্ট। কিন্তু বর্তমান গবেষণায় উঠে এসেছে, চাঁদের জন্েনর অনেক দিন পর অবধি সেখানে পানি ছিল। পানি সরে যাওয়ার জন্য তাঁরা দায়ী করেছেন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতকে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, আজ থেকে শত কোটি বছরের বেশি সময় আগে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে চাঁদের অন্তত ৯৫ শতাংশ পানি সরে গেছে। তাহলে প্রশ্ন হলো, বাকি পাঁচ ভাগ পানি গেল কোথায়? যেহেতু চাঁদের অভিকর্ষজ বল কোনো বায়ু কিংবা জলকণা ধরে রাখতে পারে না, তাই ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদের পানির একটা অংশ পৃথিবীর দিকে চলে আসতে পারে। আবার চাঁদের দুই মেরুতে বরফেরও সন্ধান মিলতে পারে এর কিছু অংশে। এ সম্পর্কে জানতে আরও গবেষণার দরকার আছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
চাঁদ থেকে নিয়ে আসা সবুজ ও কমলা রঙের কাচজাতীয় পদার্থের খুব সুক্ষ্ম বিশ্লেষণে এই প্রমাণ মেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, এর ১০ লাখ ভাগের ৪০ ভাগ অংশে পানি থাকার উপযোগী একটি করে গর্ত আছে; যেখানে পানি কিংবা হাইড্রোজেনের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। আগামী বছর চাঁদে পানি খোঁজার বিশেষ অভিযান এলক্রস থেকে পানির অস্তিত্বের বিষয়টি নিয়ে আরও জানা যাবে বলে বিশ্বাস বিজ্ঞানীদের।
চাঁদ সম্পর্কে মানুষ জেনে গেছে অনেকটাই। একে আর খুব দুরে বলেও মনে হয় না। অনেকটা একই বাড়ির ভিন্ন ঘরের মতো।
মানুষের এখনকার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে মঙ্গল গ্রহ। মঙ্গল জয়ের অভিপ্রায় তাবৎ দুনিয়ার। কিন্তু জয় করতে হলে আগে জানতে হবে মঙ্গলকে। প্রতিদিন নানা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নতুন নতুন তথ্য জানার পাশাপাশি মানুষ স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে মঙ্গলে পা রাখার। সেদিক থেকে তারা হয়তো খুব দুরে নয়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই অসাধ্য সাধ্য হতেও বোধহয় খুব দেরি হবে না। কিন্তু অজানা মঙ্গলে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতি। আর সে কাজটিই এখন করছে নাসাসহ অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। চাঁদে যাওয়া প্রসঙ্গে নাসার সবচেয়ে বড় যুক্তি এই প্রস্তুতিকে ঘিরেই। তারা বলতে চাইছে, মঙ্গলে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবেই তারা চাঁদে যেতে চায়। আর এই মিশন চেষ্টা করে যাবে চাঁদে স্থায়ী কোনো স্থাপনা গড়ে তোলার জন্য। নাসার নভোচারীরা চাঁদে বিকল্প শক্তি ও জ্বালানি বা পানি খোঁজার কাজটিও করবেন তখন। তাঁরা চেষ্টা করে যাবেন চাঁদের জমানো বরফ গলিয়ে পানি উৎপন্ন করা যায় কি না কিংবা চাঁদের মাটি খুঁড়ে কোনো খনিজ জ্বালানির সন্ধান পাওয়া যায় কি না। সুর্যরশ্মি থেকে শক্তি সংগ্রহ করে চলার চেষ্টা করেও দেখবেন তাঁরা।
-জাবেদ সুলতান পিয়াস

0 comments: